নতুন বছরের শুভক্ষণে কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত বাংলা ছবি ‘বিসর্জন’ মুক্তি পেল। যথারীতি বিসর্জন দেখতে পৌছে গেলাম নন্দনে। আর একটা মুগ্ধতার রেশ মনে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। এর আগে কৌশিক গাংগুলীর কোনো ছবি আমাদের নিরাশ করেনি। এবারেও যে কৌশিক গাঙ্গুলী নিরাশ করবেন না তা জানতাম| দুই বাংলার যে মেলবন্ধন বিসর্জনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে তা অসাধারণ। বিসর্জন আরো একবার প্রমাণ করলো ভালোবাসা কোনো ধর্ম, কোনো দেশ, কোনো কাঁটাতারের বেড়াকে ভয় পায় না। এই ছবিটির জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি সম্পূর্ণ সার্থক। একটু অন্য রকম করে বলা যাক, ‘বিসর্জন’ ছবিটির সাফল্যের কারণ ১.প্রথমে আসা যাক অভিনয়ে৷ জয়া আহসানের সেরা অভিনয়| আবীর যথাযত৷ কৌতুক চরিএে কৌশিক গাঙ্গুলি এর অভিনয় অনবদ্য। কৌশিক গাঙ্গুলীর মতো অভিনেতাকে এই ছবিতে খুঁজে পাবেন৷ অভিনয় এই ছবির সেরা সম্পদ। ২. এবার আসা যাক গানে৷কালিকা প্রসাদের শেষ কাজ সকলেই মনে রাখবে৷ ছবির শুরুতেই কালিকাদাকে স্মরণ করা হয়৷ “নাও যায় রে” এবং “বন্ধু তোর লাইগা রে” মন ছুঁয়ে যায়। ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের সেরা আবহ সংগীত। ৩. ছবিতে ক্যামেরার কাজ দুর্দান্ত। প্রথম দৃশ্যে ইছামতী নদীর বির্সজন অনবদ্য। ছবির সম্পlদনা যথাযত। ৪. অবশেষে চিত্রনাট্য ও পরিচালনা। চিত্রনাট্য সম্পূর্ন-ই বাঙাল ভাষায়৷কিন্তু দুর্দান্ত চিত্রনাট্য । শব্দ পরিকল্পনা সামান্য নিম্নমানের। কিন্তু কৌশিক গাঙ্গুলীর চিত্রনাট্যের পরিপক্কতা ছবিকে সুন্দর করে তৈরী করে।| ৫. ছবির গল্প খুব সাধারণ হয়েও অসাধারণ। গল্প সম্পূর্ণ প্রেমের কিন্তু এই ছবিতে সেই অর্থে প্রেম দেখানো হয়নি, এখানে প্রেম কিছুটা মানসিক ভাবে নির্ভরশীল। এই ছবির নায়ক কিন্তু কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ৬. জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার অধিকার আছে এই ছবির। নম্বর দিয়ে এই ছবি যাঁচাই করা দৃষ্ঠতা। তাও নম্বর দিতে বলা হলে , ৯/১০। শব্দের পরই কৌশিক গাঙ্গুলীর সেরা ছবির স্থানে ‘বির্সজন’।‘বিসর্জন’ ছবিটি এখনো পর্যন্ত এই বছরে আমার কাছে সেরা ছবি। national award পাওয়াই শেষ কথা নয়, বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ছাপ রেখে গেলো বিসর্জন এবং কৌশিক গাঙ্গুলী আরো একবার প্রমান করলেন যে বাংলা ছবি এখনো বেঁচে আছে আর থাকবে।
ঋচা দত্ত