বুক রিভিউ
ঋচা দত্ত: বহুদিনের অপেক্ষার পর যখন হাতে পেলাম বই আকারে ‘বিন্দুবিসর্গ’-কে তখন ভাবছিলাম , কবে কত দিনে পড়ে শেষ করব। এটা বুঝতে পারলাম, হাতে নিয়ে বই পড়ার আনন্দ-ই আলাদা। এক কথায় বলতে পারি, বিন্দুবিসর্গ আমাকে মুগ্ধ করলো। অসাধারণ একটা উপন্যাস। হ্যাঁ, আমি এখন বেশ একটা ঘোরের মধ্যে-ই আছি। ‘ বিন্দুবিসর্গ ‘ নিয়ে বলার আগে লেখক দেবতোষ দাশের লেখালিখি নিয়ে একটু বলি, কিছুদিন আগে দেবতোষ দাশের লেখা একটা নাটক ‘কৃষ্ণপক্ষ’ দেখে এলাম। নাটকটি দেখার পর একরকম বাকরূদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। কিছু প্রশ্ন যেন ক্রমাগত চাবুকের মতো সামনে এসে দাঁড়াতো, উত্তর ছিল না আমার কাছে। তখনই বুঝেছিলাম লেখক তার ভাবনাকে ঠিক কোন উচ্চ স্তরে নিয়ে গিয়ে ভাবেন। ২০১৪ সালে ওনার লেখা ‘বিষকন্যা’ অসংখ্য পাঠকের মনজয় করতে সফল হয়েছিল। এবার আসি ‘বিন্দুবিসর্গ ‘ এর বিষয়ে। এই উপন্যাসটি মূলত একটি ফিকশন। কলকাতার এক সংবাদপত্রের সম্পাদক হঠাৎ খুন হন। সেই খুনের তদন্তে নামেন লালবাজারের ডিসি-ডিডি রজত রায় এবং তার বন্ধু ডিকে। তদন্তে নেমে ওরা একটা পাণ্ডুলিপির খোঁজ পায়। দীর্ঘ বছর গবেষনা করে এক বাঙালী গবেষক রামায়ন মহাভারতের মধ্যে আচ্ছাদিত গুপ্ত সংকেতের অর্থ উদ্ধার করেন। খোঁজ পান এমন এক তথ্যের যা প্রকাশিত হলে বদলে যাবে ভারতের ইতিহাস। স্বাভাবিক ভাবেই ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদীর দল এই তথ্যকে ধ্বংস করতে চায়। কি সেই তথ্য? কেন খুন হতে হল সম্পাদককে? কি ভাবে বদলে যাবে ভারতের প্রাচীন ইতিহাস? সেই পাণ্ডুলিপিকে কি রক্ষা করা যাবে? এই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে ‘ বিন্দুবিসর্গ ‘তে। পত্রভারতী থেকে প্রকাশিত এই বইটির প্রচ্ছদ অসাধারণ। আমার মনে হয় এই সময়ে পড়া আমার কাছে ফিকশন উপন্যাসের মধ্যে ‘ বিন্দুবিসর্গ ‘ এখনও পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ লেখার দাবী রাখে। সকলের এই উপন্যাসটি পড়া খুব প্রয়োজন বলে আমি মনেকরি।
অনেক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই লেখকে। এই ধরনের লেখা আরো লিখুন লেখক। এবং আরো “কৃষ্ণপক্ষ” সৃষ্টি হোক তাঁর হাতে। যা আমাদের এই মূহুর্তে সমাজের জন্য বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ‘ঋ’ এর ছবিচর্চায় বিসর্জনকে ফিরে দেখা