Home / রবিবারের আড্ডা / কবি-কবিতা , বিষাদ ও আত্মহত্যা

কবি-কবিতা , বিষাদ ও আত্মহত্যা

“দীপ নিভে গেছে মম”

সুমনা দাসদত্ত

“Do not blame anyone for my death and please do not gossip. The deceased terribly dislike this sort of thing. Mamma, sisters and comrades, forgive me – this is not a way out (I do not recommend it to others), but I have none other. Lily – love me…Comrades of VAPP – do not think me weak-spirited. Seriously – there was nothing else I could do.”… বিখ্যাত এক কবির কলম এখানেই থেমে যায়।এটিই তাঁর জীবনের শেষ লেখা। তবুও এ লেখা মোটেও সৃষ্টি সুখের উল্লাস নয়। বরং এক ব্যথার চিৎকার। বিখ্যাত রাশিয়ান কবি ভ্লামিদি ভ্লাদিমিরভিচ মায়াকভস্কি(১৮৯৩-১৯৩০) তাঁর সুসাইড নোটে এই কথাগুলিই লিখে গেছিলেন। ভাবতে অবাক লাগে ব্যাক্তিত্বে, প্রতিভায়, দৈহিক সৌন্দ্যর্যে পরিপূর্ণ এই কবি যাকে কিনা ‘‘raging bull’’ বলা হতো তিনিও বিষণ্ণতায় ক্লান্ত হয়ে মৃত্যুকেই বেছে নিলেন। ভ্লামিদি মায়াকভস্কির কবিতা দেশের বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে, তাঁর কবিতার প্রথমদিকে সমাজবাদের সুর শোনা গেলেও বেশিরভাগ কবিতায় কান পাতলে বিষণ্ণতার সুর খুঁজে পাই।১৮৯৩ সালে ১৯ শে জুলাই প্রখ্যাত এই কবি জন্মগ্রহণ করেন রাশিয়ার জরজিয়ায়। বাবার আকাল মৃত্যু্তে তিনি চলে আসেন মাস্কোতে। মাস্কোয় ভ্লাদিমি মার্ক্সিস সাহিত্যের প্রতি ঝুঁকে পড়েন, ১৯০৮ সালে বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে জেলে যেতে হয়। এই সময় থেকেই তিনি কলম ধরেন। তাঁর ব্যাক্তিগত জীবন খুব সুখের ছিল না।vladimir mayaskyvyski
সম্পর্কের টানা পোড়েনে তিনি ছিলেন ক্ষত-বিক্ষত। তাঁর কবিতাতেও এই বিষাদ ধরা পড়ে, তিনিই নিজের মেরুদণ্ডকে বাঁশি করে বাজিয়েছেন। তাঁর বিখ্যাত কবিতা ‘backbone flute’ জুড়ে ব্যথারই গান বেজে যায়। ‘I wont drink poison/or jump to demise/or pull the trigger to take my own life’ এই কবিতাটি তিনি তাঁর প্রেমিকা লিলিয়া ব্রিককে উৎস্বর্গ করেছেন। কবির জীবনে কোথাও অর্থ কষ্টের ছবি আমরা পাই না। কিন্ত মানসিক টানাপড়েনে এতো বিপর্যস্ত ছিলেন যে মৃত্যুই সহজ রাস্তা হিসেবে মনে করছিলেন। ১৯৩০ সালের ১৪ই এপ্রিল সকালবেলা রিভলভারের গুলিতে আত্মহত্যা করেন।
ernest hemingway
আরনেস্ট হেমিংওয়ে Ernest Hemingway(১৮৯৯-১৯৬১): এই কবিও নিজের জীবনের উপসংহার নিজেই লেখেন, সেই উপসংহারটুকু নীচে পাঠকগনের সাথে ভাগ করে নিলাম-
“What these shock doctors don’t know is about writers…and what they do to them…What is the sense of ruining my head and erasing my memory, which is my capital, and putting me out of business? It was a brilliant cure but we lost the patient’ এটিও একটি সুসাইড নোট। কবি আরনেস্ট হেমিংওয়ের বিষন্নতা থেকে মুক্তির চুক্তিপত্র। আফ্রিকায় বিমান দুর্ঘটনরায় পড়ে তিনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে আহত হয়েছিলেন। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে লেখকের শরীরের অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়েছিল, তিনি চিকিৎসা আর মেনে নিতে পারছিলেন না। সবকিছু থেকে মুক্তি পেতে শর্টগানের গুলিতে আত্মহত্যা করেছিলেন।
‘দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি’ উপন্যাসের কল্যাণে আমাদের দেশেও লেখক বেশ পরিচিত, অন্তত পড়ুয়াদের কাছে। বিংশ শতাব্দির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাসিক। For Whom the Bell Tolls, A Farewell to Arms, The Old Man and the Seaতাঁর অন্যতম সেরা সৃষ্টি।
sylvia plath
সিলভিয়া প্লাথ, Sylvia Plath (১৯৩২ – ১৯৬৩):
সিলভিয়া প্লাথ একজন আমেরিকান কবি এবং উপন্যাসিক। তাঁর বেশিরভাগ কবিতা স্বীকারোক্তিমূলক, এজন্য তাকে Confessional পোয়েট বলা হয়ে থাকে। Daddy তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা। প্লাথ দীর্ঘদিন বিষন্নতায় ভুগছিলেন এবং ১৯৬৩ সালে তিনি আত্মহত্যা করেন। ১৯৮২ সালে তাকে মরণোত্তর পুলিৎজার পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। সিলভিয়া প্লাথের লেখা শতাব্দীর অন্যতম সেরা উপন্যাস The Bell Jar এ মৃত্যুর প্রতি প্লাথের অনুরাগের চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি সেখানে লিখেছেন-
“Death must be so beautiful. To lie in the soft brown earth, with the grasses waving above one’s head, and listen to silence. To have no yesterday, and no to-morrow. To forget time, to forgive life, to be at peace.”
মৃত্যুর প্রতি তাঁর প্রবল একটা আকর্ষণ ছিল বিশ বছর বয়সেও তিনি একবার অত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।। “I desire the things that will destroy me in the end.”
১৯৬৩, স্বামী টেড হিউজ যে কিনা একজন বিখ্যাত কবিও তাঁর থেকে আলাদা হয়েছেন, জীবনের কাছে বারবার প্রতারিত হচ্ছেন এবং আবসাদে ডুবে যাচ্ছেন অবশেষে মৃত্যুকেই সমাধানের একমাত্র পথ হিসেবে বেছে নিলেন খুব সতর্কতার সাথে চুলোর উপর মাথা রেখে গ্যাস ছেড়ে দিয়ে আত্মহত্যা করেন।yasunari kawabata
ইউসুনারি কাওবাতা Yasunari Kawabata(১৮৯৯ – ১৯৭২):
যদিও তাঁর আত্মহত্যার ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলেছে আনেকেই।আমারা জানি না এই ঘটনার পান্ডুলিপি তিনি নিজেই লিখেছিলেন কিনা। মৃত্যুর চার বছর পূর্বে ১৯৬৮ সালে তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। Snow Country, Thousand Cranes, and The Old Capital নোবেল পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে এই তিনটি উপন্যাস বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হয়, যদিও কাবাতা তাঁর সকল সাহিত্যকর্মের উপর নোবেল পুরস্কার পান। তিনিই জাপানে সর্বপ্রথম সাহিত্যে নোবেল পান। জাপানের এই প্রভাবশালী লেখক ১৯৭২ সালে গ্যাস টেনে আত্মহত্যা করেন।Anne Sexton
এনি সেক্সটন, Anne Sexton:
আমেরিকান এই লেখককে উত্তর আধুনিকতার একজন অন্যতম কবি হিসেবে ধরা হয়।তাঁর কবিতায়ও জীবনের প্রতি দায়বদ্ধতার সীকারোক্তি।তবুও জীবনের দায়ভার তিনি বহন করতে পারলেন না, Live or Die কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৬৭ সালে তিনি নোবেল পুরস্কার পান।
The Awful Rowing Toward God পাণ্ডুলিপিটি দিয়ে এনি একজন রিপোর্টার কে সেটি তাঁর মৃত্যুর আগে প্রকাশ না করার জন্য বলেছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি পাণ্ডুলিপিটি নিয়ে কবি Maxine Kumin’-র সাথে দেখা করে বইটি ১৯৭৫-এর মার্চে প্রকাশ করতে বলেছিলেন। এরপর তিনি বাসায় ফিরে নেশা করে গাড়ির গ্যারেজে গিয়ে প্রথমে নিজেকে গ্যারেজবন্দী করেন এবং ইঞ্জিন চালিয়ে দিয়ে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসে আত্মহত্যা করেছিলেন।david foster wallace
ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস (১৯৬২-২০০৮):
উত্তর আধুনিক যুগের একজন লেখক ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস। বিখ্যাত উপন্যাস Infinite Jest -এর জন্য আমেরিকান এই উপন্যাসিক সর্বাধিক পরিচিত। তিনি ছিলেন সাহিত্যের অধ্যাপক; এবং উপন্যাস লেখার পাশাপাশি তিনি একজন ছোটগল্প লেখক এবং প্রাবন্ধিক ছিলেন।
ওয়ালেস বিষন্নতায় ভুগছিলেন, বহুদিন ধরে মেডিকেশনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ২০০৮ সালে নিজ রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর পরে তাঁর একটি পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়, যেটি The Pale King নামে পরে প্রকাশিত হয়।Seneca
সেনেকা, Seneca (খ্রিস্টপূর্ব ৪ – ৬৫ খ্রিস্টাব্দ):
“Death: There’s nothing bad about it at all except the thing that comes before it — the fear of it.” (Letters from a Stoic)
সেনেকা ছিলেন একজন রোমান দার্শনিক, রাষ্ট্রনায়ক এবং নাট্যকার। পরবর্তীতে তিনি সম্রাট Nero ’র উপদেষ্টা হয়েছিলেন। নিরোই তাকে ষড়যন্ত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করে আত্মহত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেনেকা নির্দেষ পালন করেন। খুব ভয়ংকরভাবে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে, রক্ত ঝরিয়ে মৃত্যুবরণ করতে চেয়েছিলেন, সেটি না হওয়ায়, পয়জন পুশ করেন, তাতেও মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় গরম পানির মধ্যে নিজেকে রেখে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।Karin Boye
কারিন বোয়ে, Karin Boye (১৯০০-১৯৪১):
কারিন বোয়ে একজন সুইডিশ কবি ও উপন্যাসিক।এই বিখ্যাত কবির জীবনে নেমে আসে বিষন্নতার কালো মেঘ।সেই মেঘ সরিয়ে আর কোনোদিন সূর্য হাসেনি।তিনি মেঘে ঢাকা
তারা হয়ে সবার আলক্ষ্যে নিজেকে ঝরিয়ে ফেলেন। Clouds তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ। বোয়ে টি.এস. এলিয়টের কবিতা সুইডিশ ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন। বোয়ে মূলত তাঁর “Yes, of course it hurts” (Swedish: Ja visst gör det ont) এবং “In motion” (I rörelse) from her collections of poems “The Hearths” (Härdarna), 1927, and “For the sake of the tree” (För trädets skull), 1935 ‘র জন্য বিখ্যাত।
Crisis (Kris) উপন্যাসে তিনি ধর্মের দূরাবস্থা এবং লেসবিয়ানিজম নিয়ে লিখেছেন। Kallocain তাঁর আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস, যেখানে তৎকালীন জার্মানি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের চিত্র ফুটে উঠেছে।
মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন বোয়ে। নিকবর্তী একটি পাহাড়ে পাথরের উপর তাঁর মৃতদেহ পড়েছিল। Hunter S. Thompson
হান্টার স্টকটোন থমসন, Hunter S. Thompson(১৯৩৭-২০০৫):
“No More Games. No More Bombs. No More Walking. No More Fun. No More Swimming. 67. That is 17 years past 50. 17 more than I needed or wanted. Boring. I am always bitchy. No Fun — for anybody. 67. You are getting Greedy. Act your old age. Relax — This won’t hurt.” আরো এক নক্ষত্র পতনের নীরব সাক্ষীর ইতিহাস এই লেখা।হেমিংওয়ের মত তিনিও মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি উপরের এই সুইসাইড নোটটি লিখে গিয়েছিলেন।
“Life should not be a journey to the grave with the intention of arriving safely in a pretty and well preserved body, but rather to skid in broadside in a cloud of smoke, thoroughly used up, totally worn out, and loudly proclaiming “Wow! What a Ride!”
হান্টার থমসন ছিলেন একজন আমেরিকান লেখক এবং সাংবাদিক। Hell’s Angels: The Strange and Terrible Saga of the Outlaw Motorcycle Gangs (1967) ’র জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান।
শেষে যার কথা বলে এই বিষাদঘন উদাহরনের তালিকা বন্ধ করতে চায়, তিনি হলেন আমার প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪)। এতদিন কবিতা জুড়ে দুঃখ ছিল, বেদনা ছিল, বিষন্নতা ছিল, এই কবির কবিতায় সব কিছু ছাপিয়ে উঠে এল আত্মহত্যা।কবি লিখলেন, ‘ফাল্গুনের রাতের আঁধারে যখন গিয়েছে ডুবে চাঁদ মরিবার হল তার সাধ’ এতো মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা। তিনি ১৯৫৪ সালে বালিগঞ্জে ট্রাম দুর্ঘটনায় মারা যান। এই মৃত্যু দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা এখনো সন্দেহ ঘনীভূত হয়।jibananda das
আসলে এই সৃষ্টি সুখের উল্লাস যাদের কলমে ধরা দেয়,তাঁরা ব্যক্তিযাপনে খুব একটা উল্লসিত হতে পারেন না। কিন্তু কেন এই বিষাদ? কেন তাঁরা অজান্তেই অনেক দুঃখকষ্টের মধ্যে ডুবে যান ।এই বিষয়টির উপর যদি আলোকপাত না করি তবে এই রচনার মুল্য আনেকটাই লঘু হয়ে যায়। আসলে কবিতা এমনি এক আমোঘ টান যার জন্য কবিরা সব কিছু তুচ্ছ করতে পারেন এমনকি মৃত্যুকেও।মৃত্যু যে কবির পায়ের ভৃত্যসম তা উপরোক্ত উদাহরন থেকেই স্পষ্ট।মৃত্যুটুকুই আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়, কবিতাকে ঘিরে কবির যে যাপন তা উপরক্তো উদাহরনকে পুষ্ট করেছে সেটাই দেখা যাক। কবিতাকে ঘিরে সমগ্র বিশ্বের কবিরা যে যাপন চিত্র রেখে গেছেন তা মোটেও দৃষ্টিনান্দনিক নয়। কবিতার বাহ্যিক পরিকাঠামো বেশ নড়বড়ে এখনো কবিতা কোনও জীবিকার নাম হয়ে উঠতে পারেনি।কবিতা থেকে কবিজীবনের প্রাথমিক চাহিদা অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান জোগাড় করে নিতে পারবেন এমনটা হয়না।এখনতো কবি শব্দটি ব্যাঙ্গাত্মক গালাগাল।যাদের কিছু করার মুরোদ নেই তারাই কবিতা লেখে।এখনও কোন আভিভাবক তাদের সন্তানকে কবি হওয়ার পরামর্শ দিতে শোনা যায় না।তবুও কবিতা এমন এক আমোঘ টান সেই টানের মোহ থেকে কবিকুল বেরতে পারে না সহজে।কবিতাকে ঘিরেই তাদের জীবন আবর্তিত হয়,কবিগুরু রবীন্দ্রনাথও আভিমান করে লেখেন ‘গাঁথিছ ছন্দ দীর্ঘ হ্রস্ব/মাথা ও মুণ্ড ছাইও ভস্ম/মিলিবে কি তাহে হস্তীঅশ্ব/না মিলিবে শস্য কণা’’ কবিতার জন্য অনেক কবি নিশ্চিত ভবিষ্যত উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় কষ্ট স্বীকার করেছেন।দারিদ্রে হতাশায় আনেক কবির জীবনাবসান হয়েছে উদাহরন হিসেবে মাইকেল মধুসূদন দত্ত,হেমচন্দ্র,নজরুল ইসলাম,জীবনানন্দ দাশের নাম করাই যায়।কবিতার আশ্রয়ে এই কবিরা দারিদ্রতাকে অহঙ্কারে রুপায়িত করেছেন।
এতো গেলো কবিতার বাহ্যিক পরিকাঠামো,আমি পাঠকগণকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে চায়। কবিতার বাহ্যিক পরিকাঠামো যে নড়বড়ে এতও চামড়ার চোখেও ধরা পড়ে,কিন্ত কবিতার আভ্যন্তরীন ব্যপ্তিই বা কতটুকু,কেন কবিতা ঘিরে এতো বিষাদ?কেন লেখার শিরনামে উদাহরনের তালিকা দীরঘতর হতে থাকে?কবিতার মননে কি সারাক্ষণ আনন্দযজ্ঞ চলে?সেই আনন্দ যজ্ঞে কি কবিরা সবসময় নিমন্ত্রন পান সর্বদা?জানিনা,তবে প্রশ্নগুলোর উত্তরের কাছকাছি পৌঁছতে না পারলেও তো এ লেখা পূর্ণতা পায় না।আসলে কবিতা কেন সমগ্র সৃষ্টিকেই যদি আমরা ধরি তো সবখানেই এক বিষাদের ছায়া।সৃষ্টি ধীরে ধীরে লয়প্রাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।জন্ম,মৃত্যুর দিকে।সমগ্র জগত ক্ষয়ের দিকে।এর ছায়া যে কবিতায় পড়বে এ আবার নতুন কথা কি।আর সময়ের আগেই সময়কে বুঝে নেওবদাচেষ্টা একমাত্র কবি রাই করে থাকেন তাই ক্ষয়ের অনুভূতি তাদের কবিতায় এসে পরে,আর সমগ্র সৃষ্টির মতো ভিতরে ভিতরে তারাও ক্ষয় হতে থাকে।আবশেষে নিজের জীবনকেই তুচ্ছ মনে করেন।এভাবেই কবিতাকে ঘিরে কোনো কোনো কবির দীপ নিভে যায়।আর দীপ নিভে গেছে মম’’ শিরোনামের লেখাটি একটি অশ্রুবিন্দু হয়ে পাঠকের চোখ ভিজিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: রবিবারের সান্ধ্য কবিতা আসর-১৫

Check Also

গল্প

রবিবারের ছোটগল্প চাঁদ ছোঁয়ার গল্প লিখেছেন সাগরিকা রায়

ছোটগল্প Illustration: Preety Deb কচু গাছের আড়ালে দাঁড়ালেও চান্দু নিজেকে বেশ লুকোতে পারে।গজু বলে, ভাই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *