সবার খবর, হেল্থ ডেস্ক: বিয়ে করার আগে বা পরে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের মনে একটাই প্রশ্ন জাগে, বাচ্চা নেওয়ার সঠিক বয়স বা গর্ভবতী হওয়ার সময় ২০, ৩০ না ৪০? কিন্তু এই প্রশ্নটির একই উত্তর একেকজন মানুষের জন্যে একেক রকম হতে পারে। বাচ্চা নেওয়ার আগে আপনাদের কয়েকটি বিষয় নজর রাখতে হবে। নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি সন্তান ধারণের জন্যে প্রস্তুত তো? খেয়াল রাখুন, আপনার কেরিয়ার ভবিষৎ পরিকল্পনা, আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতা আপনার সঙ্গে আছে তো? সব থেকে বেশি মাথায় রাখুন বয়স ও শারীরিক সুস্থার দিকে।
যদিও নারীরা মনে করেন ২০ থেকে ৩০ এর ভেতর সন্তান জন্ম দেওয়ার সর্বোত্তম সময়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কেবলমাত্র নারীদেরই নয় পুরুষরাও বন্ধ্যাত্বের শিকার হয়ে থাকেন, মত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। তাই এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে, গর্ভধারণ ও একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দেওয়ার সঠিক বয়স কত?
আসলে যেকোনো বয়সে একজন নারী তার মাতৃত্বের স্বাদ নিতেই পারেন, একথা যেমন সত্যি অপরদিকে একটি নির্দিষ্ট বয়সে গর্ভধারণ করলে তা নবজাতক ও প্রসূতির শারীরিক সুস্থতা ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষিত হয়ে থাকবে এ কথাও সত্যি।
ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের গবেষকদের মতে, লেট টুয়েন্টিজ অর্থাৎ ২৫ থেকে ৩০ মধ্যে বাচ্চা নেওয়ার আদর্শ সময়। এই বয়সে শরীরের প্রজনন সিস্টেম ও অন্যান্য দৈহিক ক্ষমতা সঠিক অবস্থায় থাকে। কিন্তু আজকের পরিবর্তিত সময়ে, যখন পরিবারগুলি ছোট হয়ে যাচ্ছে এবং নারীরা কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকছেন, তখন গর্ভাবস্থার এই বয়স প্রত্যেকের পক্ষে সঠিক নাও হতে পারে।
আমেরিকান কলেজ অফ অ্যাবস্টেট্রেটিশিয়ন এবং গাইকনোকোলিজিস্টদের মতে, ঋতুচক্র শুরু হওয়ার সাথে সাথেই একজন মহিলা ১০ থেকে ২০ লক্ষ ডিম্বাণু তৈরি করতে সক্ষম হন। তারপর তার যত বয়স বাড়তে থাকে ডিম্বাণুর সংখ্যাও কমতে থেকে। একজন মহিলা ঋতুচক্র চলাকালীন যেকোনো সময়ই গর্ভবতী হতে পারেন। কিন্তু ৩২ বছর বয়স থেকেই গর্ভধারণের ক্ষমতা কমতে থাকে ৩৭ বছর বয়সে আরও দ্রুত কমে যায়।
‘জার্নাল হিউম্যান রিপ্রোডাকশান’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সের মহিলাদের তুলনায় ৩৫-৪০ বছর বয়সী মহিলাদের গর্ভবতী হওয়ার সুযোগ ৫০% কমে যায়, দাবি করেছে জার্নালটি। এই গবেষণা মতে, ২০-২৫ বছর বয়স গর্ভবতী হওয়ার জন্যে আদর্শ। তবে ৩০ বছর বয়সের পরে যদি কেউ গর্ভবতী হন, মা এবং বাচ্চার জন্যে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে। এমনকি ডাউন সিন্ড্রোম বা অ্যাবনরমাল বাচ্চার জন্মও হতে পারে। শুধু তাই নয় বাচ্চা জন্মের সময় মা ও নবজাতক উভয়েরই মৃত্যুর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা।
তাই গর্ভধারনের আগে সঠিক পরিকল্পনা করে তবেই গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নিন। আর অবশ্যই তার আগে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কারণ একটি সুস্থ মা ও সুস্থ নবজাতক জাতীর ভবিষৎ তা ভুলে গেলে চলবে না।
আরও পড়ুন: প্রথম দৃষ্টিতেই মহিলারা পুরুষদের যা দেখেন তা জানলে আপনি হতবাক হয়ে যাবেন