সবার খবর, হেল্থ ডেস্ক: টিবি অসুখের কথা আমরা সকলেই জানি বা পাড়া প্রতিবেশিকে এই রোগে ভুগতে দেখেছি। পৃথিবীতে মোট মানুষের মৃত্যুর ১০ শতাংশ এই রোগেই মারা যান। ‘লন্ডন গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি নরওয়ে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেল্থ’ জানাচ্ছে, ১২০০ খ্রীষ্টাব্দে ইউরোপে প্রথম টিবি রোগ দেখা যায়। আস্তে আস্তে সারা পৃথিবীতে পরবর্তীতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতকে আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়াতে অনেককেইই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমান সময়ে আফ্রিকা ও কোরিয়াতে টিবি মহামারির আকার ধারণ করেছে।
গ্রাম-গঞ্জে টিবি অর্থাৎ টিউবারকুলাসিসক অনেক নামেই পরিচিত। টিবির অপর একটি নাম হল যক্ষ্মা। টিবি একটি ছোঁয়াচে রোগ বললে ভুল হবে না। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি শারীরীকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। টিবি আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে আরও নানান অসুখকেও ডেকে আনতে পারে। চেষ্ট-স্পেশালিষ্টরা বলছেন, অনেকেই মনে করেন টিবি কেবলমাত্র ফুঁসফুঁসের একটি রোগ। আসলে তা নয়। এটি তাঁদের ভুল ধারণা। এই রোগ দেহের অন্যান্য যে-কোনও অংশেই হতে পারে।
চেষ্ট-স্পেশালিষ্টরা আরও জানাচ্ছেন, টিবি সাধারণত দুই রকমের হয়। এক্টিভ টিবি ও এক্সট্রাপালমোনারি টিবি। অ্যাক্টিভ টিবি কেবলমাত্র ফুঁসফুসেই হয়। আবার Extrapulmonary TB: যে টিবি (বা যক্ষ্মা) ফুসফুস ছাড়া্ও দেহের বিভিন্ন অংশে হয়ে থাকে, এই ধরণের টিবিকেই চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক্সট্রাপালমোনারি টিবি বলে। ফুসফুস ছাড়াও টিবি পেট ও হাড়েও হতে পারে।
টিবি থেকে বাঁচতে চাইলে, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার অবশ্যই প্রতিদিন বেশি করে খাওয়া উচিত। কারণ, প্রোটিন জাতীয় খাবার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। টিবির ব্যাক্টেরিয়া অনেক সময় আমদের দেহের ভেতরেই থাকে। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হলে এই ব্যাক্টেরিয়া খুব একটা সক্রিয় হতে পারে না। অপরদিকে দুর্বল ব্যক্তির দেহে এই ব্যাক্টেরিয়া সহজেই সক্রিয় হয়ে ওঠে।
টিবি বা যক্ষ্মাতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ভারতে দিন দিন বাড়ছে। ২০১৬ তে চার লক্ষ মানুষ টিবি-তে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ও ২৭ লক্ষ নতুন যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগির নাম নথিভুক্ত করা হয়। ভারত, চীন ও রাশিয়াতে পৃথিবীর মোট অর্ধেক টিবি আক্রান্ত মানুষ বাস করেন।
আরও পড়ুন: সিজোফ্রেনিয়া একটি মানষিক রোগ: লক্ষণগুলিও অদ্ভুত