ছোটগল্প
তীর্থ যাত্রা ডট কম
য শো ধ রা রা য় চৌ ধু রী
Illustration: Preety Deb
তীর্থ যাত্রা যাওয়া মানেই পোঁটলা পুঁটলি। একগাদা মানুষ। আমাদের অতিধর্মপ্রাণ পরিবারে আজো দুতিনজন খুচরো কাকা এবং পিশি আছেন। তার মধ্যে কলমিপিশি সবচেয়ে বেশি ফ্যাকড়া করেন।
প্রতিদিন নতুন নতুন ফ্যাকড়া। কলমি পিশি বেজায়মোটা, প্রচন্ড খায়, আর তেমনি বেড়ানোর ইচ্ছে। বড় গ্রুপে এমনিই কেচ্ছা কাহিনির অন্তনেই। তারপর গ্রুপে দুটোমাত্র লুজ মেয়ে, আমি আর কলমিপিশি। বাকি সব তো বিবাহিত। পিশি বিশুদ্ধ বিধবা, অত্যন্ত পুণ্যবতী এবং শুচিবায়ুগ্রস্তা। আমি সিঙ্গল। পবিত্র সচ্চরিত্র পাত্র পাইনি তাই বিয়েই করিনি। শিগগিরি সাধ্বী হব। তাই একঘরে এক বিছানা শেয়ার করতে তো হয়ই, আর কলমি পিশির যাবতীয় ঝুটঝামেলাও সব আমাকে বইতে হয়। গদার মত ভারি পিশির বাজারুব্যাগও। তাছাড়া কলমি পিশি পাহাড়ে উঠবে কিন্তু কয়েকটা সিঁড়ি উঠেই হাঁপাবে, আর পারছিনা বাপু বলে বসে পড়বে। ডায়াবেটিস আছে, বলে সারাদিন আলু খাবনা, ডিম খাব না বলবে। পটাশিয়াম নাকি বেড়ে যায় তাই স্যালাড কমলালেবু ও খাবে না। সারাদিন না খেয়ে খিদেতে প্রান ফাটবে যখন, তখন বুফেতে গিয়ে মুফতে পাচ্ছে বলে, একথালা বিরিয়ানি নেবে, তাও আবার ডিনারে। তারপর সারারাত ঘুমাবে না। বারবার উঠে ঘড়ি দেখবে, ঢক ঢক করে জল খাবে। ভূতের ভয়ে ঘরের আলোও জ্বেলে রাখবে। অ্যান্টাসিড খুঁজবে, মাঝরাতে আমাকে তুলে, বেয়ারাদের তুলে চায়ের ফরমাশ করবে। গরম জলে নাকি অ্যাসিডিটি কমে।
কলমি পিশির মা, ধুতুরি দিদা অবশ্য খুব ফিট মানুষ ছিলেন। উনি আবার সে যুগের বিধবা, স্বপাকে খেতেন। কিন্তু ভ্রমণে একেবারে একপায়ে খাড়া। এসব ব্যাপারে কলমি পিশির আগেই অভঙ্গুর রেকর্ড করা আছে। আমি তখন খুব ছোট, মা বলে, ধুতুরি ঠাকুমা কাশী যাচ্ছিল মা বাবা পিশি আমাদের সংগে।
ওভার নাইট জার্নি। সকাল ন-টায়, তেতলার বাংকে স্টোভ জ্বেলে সকালে গরম গরম লুচি ভেজে খাইয়েছিল সবাইকে।
মানে, সাদা চেককাটা চেককাটা বড়বাজারের ব্যাগে করে ময়দা, ময়দা মাখার সানকি, বেলন চাকি, সব নিয়ে এসেছিলেন আরকি। অন্য ব্যাগে কাচের বোতলে করে কেরোসিন নিয়েছিলেন, আর ছোট্ট স্টোভ। রান্না-বান্না শেষ করে আবার স্টোভ ঠান্ডা করে, স্টোভ থেকে কেরোসিন বোতলে ভরে ফেলেছিলেন। তবে দু-চার ফোটা কেরোসিন বাবার মেরজাইতে পড়েছিল বইকি, বাবার সে মেরজাইতে আজো কেরোসিনের গন্ধ আছে।
কলমি পিশি ততটা করেনা। ট্রেনে স্টোভ নেওয়া সেই কবে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তবে কলমি পিশি স্বপাকে না খেলে কী হবে। বাকি সবকিছু প্রচন্ড মেনে চলে।
তবে এবারের গোটা তীর্থযাত্রাই দিনু কাকুর অবদান। আমরা মজা করে বলি দিনু চাচা। দাড়ি আছে যে। কিন্তু দিনু চাচা ধর্মপ্রাণ। রোজ গীতা পাঠ করে। গঙ্গা জলের ছোট্ট হোমিওপ্যাথির শিশি নিয়ে ঘোরে। জলের বদলে লুকিয়ে বোতলে ভদকা নেয় এখনো, খাবার আগে দু-ফোটা গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করে নেয়।
তীর্থ যাত্রা ডট কম। ধারমা ট্র্যাভেলসের নতুন প্রকল্প। সারা জীবনের জন্য দিনু চাচা এইটের মেম্বারশিপ নিয়েছেন কিনা।
রুটটা ভৌগোলিক, এ বি সি ডি দিয়ে এঁকে ফেললে হুবহু সেই জ্যামিতির খাতার ট্যারা ব্যাঁকা চতুর্ভুজ হয়ে যাবে। আমি ত ইস্কুলে থাকতে স্কোয়ার বারে ক্ট্যাঙ্গল আঁকতে বললেও ওরকমই আঁকতাম। এতে যদি মধ্যপ্রদেশের মাঝামাঝি সেই রামঠেকা পর্বত, যেখানে রাম হেলান দিয়েছিলেন, বিতে পড়বে ছত্তিসগড়ের অর্জুনঝোরা। মহাভারতের অর্জুন যেখানে হরধনু ভেঙ্গে ঝরনায় ফেলে দিয়েছিলেন সেই অর্জুন ঝোরা। তারপর যেখানে কৃষ্ণ জন্মেছিলেন, রাম জন্মেছিলেন সেসব পড়বে মধ্যবর্তী পয়েন্টে, পি কি উ আর এস। শিব ঠাকুরের আপন বাসা অমর কন্টক থেকে তারপর উড়িষ্যায় বৈতরণী নদী ধরে ধরে খানিক, সমুদ্রের ধারে একটু ঘুরে আবার দক্ষিণ। একেবারে রামসেতু অব্দি। ওটা যদি সি হয় তবে আবার উঠে উত্তরে আসতে হবে ডি-তে, পশ্চিমের সতীধামে।
পুরোটাই স্টেট স্পনসরড ঘোরা। প্রথম একশোটি টুরিস্ট গ্রুপ ডিসকাউন্ট পেয়েছে। পঞ্চাশ শতাংশ। এয়ারের ডিস্কাউন্ট তায় আবার। অবশ্য দুর্জনে বলে, হনুমান একটি সরকারি এয়ারলাইনস। তাদের এমন ভাঁড়ে মা ভবানী দশা যে ডিস্কাউন্ট না দিলে কেউ চড়েনা।
ওহ জানেন না বুঝি। ইদানীং যে হনুমান এয়ারলাইনস সবকটা সরকারি ও বেসরকারি এয়ারলাইনসকে কিনে নিয়েছে। হনুমান নামটি কত সুপ্রযুক্ত ভাবুন। সমুদ্র লঙ্ঘন করেছিলেন সাঁতরে উড়ে গিয়ে। এতদিন কেন কেউ ভাবেনি কে জানে।
২
এত দীর্ঘ পথে যাত্রা, আমরা দশজন পথিক। সকলের নানান সমস্যা। ইস্যু, যাকে বলে। আমার ইস্যু কলমি পিশি, কলমি পিশির ইস্যু বদহজম। মায়ের ইস্যু সবার খাবার খরচ রাখা। প্রত্যেক স্টেশনে প্রতিটি খাবারের চুলচেরা বিশ্লেষণ না করলে মায়ের আবার অ্যাকাউন্টেন্ট নাম সার্থক হয় না। জীবনের চল্লিশ বছর সরকারি অ্যাকাউন্টেন্টছিল এজিবেঙ্গলে। তাই এখনকার ভাগে আধখানা কচৌড়ি কম গেছে, কে দুটো গুলাব জামুন বেশি খেয়ে ফেলেছে এই নিয়ে ঝঞ্ঝাট করে একখাতাময় পেনসিলে হিসেব করেছে। আমি বলেছি স্মার্ট ফোনে ক্যালকুলেটর আছে, ওইটে ব্যবহার কর। মা পারেনা। রোজ রাতে মিটিং ডাকে, সারাদিনের খরচের হিসেব পেশ করে। সেদিন এই নিয়ে দিনু চাচা বেজায় খেপেছে। আদ্ধেক গ্লাস পেপ্সি বেশি খেয়েছে বলে মাস বার বিল রেখেছিল সাতাত্তর টাকা সত্তর পয়সা, আর দিনু চাচার আশি টাকা সাতাশি পয়সা।
এছাড়া আমাদের দলে এক আধজন বেজায় হিংস্র লোক আছেন। রোজ খানিক নন-ভেজ খোঁজেন। বলাই বাহুল্য আমরা যে রুটে বেড়াতে এসেছি, সেটা “ধারমাহলিডেজ”-এর প্যাকেজ। দিনু চাচা দশ বছর আগে প্রচন্ড ধর্মপ্রাণ হয়ে উঠেছিলেন, তখন একদিন সুপার মার্কেটে গিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কে বা কারা তাঁকে কুপন ধরায়, ফোন নাম্বার নেয়। পরদিন ফোন অরে নেমন্তন্ন করে ধারমাহলিডেজ থেকে গ্রান্ডহোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলে ডেকে নিয়ে যায়। প্রচুর সামোসা, লাড্ডু, খুব ভাল গাজরের হালুয়া আর বেদানার সরবত খেয়ে, দিনু চাচা সই করে দিয়ে আসেন ওদের ফর্মে। প্রতি মাসে মাত্র আড়াই শো টাকা নিয়ে বছরে একবার তীর্থ যাত্রার প্যাকেজ পান দিনু চাচা। এবার অবশ্য দশ বছরের মধ্যে সাড়ে ছ’বছর কোত্থাও না যাওয়া উশুল করতেই এই লম্বা রুটে বেরনো। দিনু চাচার তা নিয়ে গর্বের শেষ নেই একেবারে। বুক ফুলিয়ে ঘুরছেন, আমাদের ঘোরাচ্ছেন।
কিন্তু ঐ যে, হাজার হোক তীর্থস্থান, ধারমাহলিডেজ-এর তীর্থ যাত্রা ডট কমের কোন হোটেলেই নন-ভেজ নেই। সব জায়গায় পুণ্যবান ভেজিটেরিয়ান। আমার ত খুব ভাল লাগে। সকালে গরম কড়াইশুঁটির কচুরি, দুপুরে খিচুড়ি রাতে ভেজ বিরিয়ানি, ভুরভুর করছে ঘি-এরগন্ধ। (যেটা খেয়ে পিশি সারারাত ঘুমোয়নি)।
ফাঁকে ফাঁকে তাজা ফল, স্যালাড। স্ন্যাক্সে অজস্র ফরশান। ভুজিয়া গুজিয়া নলেন গুড়ের পায়েস।
তাও মন ভরে না আমাদের দুই অকৃতজ্ঞ ভাই হামটি ডামটির। অবশ্য আমার ধারণা পেছনে আছে ওদের বাবা। দাঁত পড়ে গেলেও নোলা কমেনি এমন বুড়ো ঝামেলাবাজ আরকে। বিজুকাকু। ওদের উৎসাহ দিয়ে চলেছে বিদ্রোহ করার জন্য। হামটি ডামটি ত প্রতিদিন খেতে বসেই রীতিমত রাগারাগি করে। ঝামেলা পাকায়। তাদের অন্তরাত্মার আওয়াজ নাকি হা আমিষ! হো আমিষ করে চলেছে। আর সেটাই, পেটের গুড়গুড়ানি হয়ে বেরিয়ে আসছে। ওরা নাকি নিরামিষ খেয়ে খেয়ে অশক্ত আর রোগা হয়ে গেছে। আমিশহীন জীবনে বাঙালি বাঁচেনা, এর কম শরীরতত্ত্বীয় প্রবচনও ঝাড়ে। প্রচন্ড ছোঁক ছোঁক করে বেড়ায়, হোটেল থেকে বেরিয়ে নিজেদের পকেটের পয়সা খসিয়ে মুরগির কাবাব জোগাড় করে খেয়ে আসে। তাই নিয়ে চাপা উল্লাসে উথাল পাথাল হয়। এমনকি সবকিছু আমাদের বলেওনা।
একদিন ত, এমন বেয়াদব আর বেপরোয়া, যে, লুক্যিএ মাটন সিঙাড়া নিয়ে চলে এল হোটেলেই। খবরের কাগজে মুড়ে, প্লাস্টিকে ঢেকে। জানতে পারলে সব্বাইকে একসঙ্গে তাড়িয়ে দিতে পারে ধারমাহলিডেজ, কিন্তু কে শোনে কার কথা। হামটি আর ডামটির কান্ডে আমরা যার পর নাই বিরক্ত। সবাই ধর্মপ্রাণ আমরা। এসেছিও তীর্থে। এত হেলদি আর পুষ্টাই, স্বাদিষ্ট আর সুন্দর খাবার পেয়েও, সাত্ত্বিক চেতনা জাগ্রত হচ্ছে না এদের, ভেবে লজ্জিতও হচ্ছি।
অ্যাকাউন্টস সামলাতে সামলাতে, মা-ও অহিংসা পরম ধর্ম নিয়ে একটা দুটো লেকচার দিচ্ছে। ইনফ্যাক্ট বাবা, যে বাবা মায়ের ভয়ে কোন ঝামেলা ঝঞ্ঝাটে থাকে না, বাবাও একদিন হামটি ডামটিকে একটু বকেই দিল। মাকে বুদ্ধি দিচ্ছিল শুনলাম, দুই ভাই আর তাদের পিতৃদেবের আমিষ ভক্ষণের জন্য একটা স্পেশাল ফাইন করা হোক। আজ রাতের হিসাব-রক্ষণী সভাতে তোলা হোক প্রস্তাব। তিনজন যদি পঞ্চাশ টাকা করে ফাইন দেয়, সে পয়সায় আমরা না হয় একদিন বিশুদ্ধ দেশি ক্যাপসিকামের বড়া খেয়ে ফেলব। মা এতে খুশি হল, কিন্তু বাবার কথায় একেবারে ডিটো দিলে মায়ের আবার মান যায়, তাই একটু বিরোধিতা করে বলে দিল, নানা বিজুকে ডবল ফাইন করা উচিত। ওকে আমি অনেক দিন দেখছি, নিরানব্বুইজন লোক বাঁদিক গেলে ওকে ডান দিকে যেতেই হবে।
বাবা তাতে আরো বেঁকে বসে বলল, ভুল বললে, ভুল। ডানদিক না বাঁদিক। অন্যেরা ডানদিক গেলে ও বাঁদিক।
৩
এই কাতু, দেখনা আবার আমার ফোনটায় কী যেন হয়ে গেল।
উফ আবার। একী পিশি তুমি যে প্রণামীর অ্যাপ থেকে পরপর চারবার একশো টাকা করে প্রণামী দিয়ে ফেলেছ!!
ছ্যা ছ্যা ছ্যা , কী হবে গো। দেখিস ত, এবার ভুল করে চারবার কৃষ্ণকে দিলাম, পরের তীর্থ স্টপেরামকে একটা ফুটো পয়সাও যদি ঠেকাই!
অনেকগুলো ধর্মীয় অ্যাপ তৈরি হয়েছে ইদানীঙ। যে কোন মন্দিরে যখন খুশি ডিজিটালি প্রণামী পাঠানোর অ্যাপ, গোমূত্র গোবর ঘুঁটে প্রসাদ বুক করার অ্যাপ, কুশাসন, খড়ম, ডিজিটাল মন্ত্রপাঠ, কোশাকুশি, এমনকি শিবলিঙ্গে অটোমেটিক অ্যাপ। তবে এসবই স্মার্ট ফোন দিয়ে করতে হয় আর
স্মার্ট ফোন নিয়ে সবাই গোলমাল করে। আমি আর হামটি ডামটি আমরা এইপ্রজন্ম, আমরাই শুধু এইসব ভাল ম্যানেজ করি।
আজ এইটা ত কাল সেইটা , হুগুল প্লে থেকে নামে সফটওয়্যারে খুঁজে খুঁজে ডাউনলোড করি আমি। হামটি ডামটি অবশ্য বেশিরভাগ সময় নিষিদ্ধ পুস্তকের মত ফোনে যে মজে থাকে প্রতি তীর্থ স্টপে গিয়ে সেটা ত, লুকিয়ে কোথায় কী আমিষ খাবার স্মাগল করতে পারবে তা নিয়ে।
আমি মা আর পিশিকে হুগুল থেকেই খুঁজে অহিংস রীতিতে বোনা জুতো, ব্যাগ, পরিচ্ছন্ন ধর্মপ্রাণ ডিজাইনের শাড়ি, পবিত্র জুস ইত্যাদি বার করে দিই। শপিং করতে ত হবেই, আর এলোমেলো শপিং মানেই একগাদা ভুল-ভাল অপবিত্র জিনিস এসে উঠত ঘরে। তার চেয়ে অ্যাপ দিয়েই ভাল।
আজ ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে পিসি আরএক কর্ম করেছে। হঠাৎ কী একটা ভিডিও খুলে ফেলেছে। আর ভিডিও দেখেই চক্ষু চড়ক গাছ। ছি ছি ছি, একী করলাম কাতু। একী দেখলাম। আমিষ, আমিষ।
আমি বলি আবার কী করলে, দেখি দেখি?
ওমা, দেখি ভিডিওতে একটা মানুষকে মন্ত্র পড়ে পড়ে পোড়াচ্ছে দুজন উপবীতধারী পুরুত। মানুষটা নাকি অপবিত্র জিনিস খেয়েছিল। তাই। মন্ত্রের মাঝে মাঝে বলছে, দেখ কেমন লাগে! আর খাবি, নিষিদ্ধ আমিষ?
ভিডিওর তলায় ফুটে ওঠে কিছু তথ্য। এই ভিডিও দু’লক্ষবার শেয়ার হয়েছে। আর চোদ্দ লক্ষ লোক লাইক দিয়েছে।
আমি পিশির স্মার্ট ফোন হাতে নিয়ে চটপট ভিডিও ডিলিট করি। আর বলি, দোষ কি পিশি। গীতা চন্ডীতেও ত মানুষ মারার কথা আছে। রূপকথাতেও আছে। ঠাকুরমারঝুলি ত ছোট্টবেলায় তুমিই পড়ে শোনাতে আমায়। মনে নেই? হাঁউ মাঁউ খাঁউ মাঁনুষের গঁন্ধপাঁউ?
পিশি বলে, মানুষ পোড়ার গন্ধ কেমন কখনো শুঁকেছিস, কাতু? আমি শুঁকেছি। তোর পিশেকে পোড়ানোর দিন। পুরো চিকেন কাবাবের মত গন্ধরে। আমার ফোন যে আমিষ হয়ে গেল রে।
আমি বলি, দিনু চাচার হোমিওপ্যাথি শিশিতে গঙ্গা জল আছে। এনে দুফোঁটা ছিটিয়ে নাও পিশি। শুদ্ধ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: রবিবারের ছোটগল্প কচ্ছপ রাজার রাজপ্রাসাদ লিখেছেন শাম্মী তুলতুল।