ধারাবাহিক উপন্যাস
খাতা
দেবশ্রী চক্রবর্তী
Illustration: Preety Deb
পর্ব: ১
আজ তিতিরের মন ভালো নেই। ওর মন খারাপ হলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে মন আবার ঠিক হয়ে যায়। প্রায় তিনশো বছরের পুরানো বাড়ির বিশ ইঞ্চি চওড়া কার্নিশের ওপর দু-হাত রেখে সে তাকিয়ে আছে সামনের বটগাছটার দিকে। আজ ভোর থেকে প্রকৃতিরও মন খারাপ, রৌদ্রজ্জ্বল সুন্দর হাসির ঝিলিকের ছিটেফোঁটাও নেই তার মুখে। মেঘলা দিনে তিতিরের মন খারাপ করে। কেন করে অনেক ভেবেও কোনো উত্তর সে পায় না।
বসার ঘরের সাথে বারান্দাটা একটা সাদা চিকোনের পর্দা দিয়ে আলাদা করে রাখা, পর্দার নিচে সে সখ করে ঘুঙ্গুর লাগিয়েছে। রাতের বেলায় পর্দাটা হাওয়ায় যখন দোলে মনে হয় কেউ ঘুঙ্গুর পরে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে। এত বছরের পুরনো বাড়ির মাঝে সাদামাটা জীবন-যাপন করা বোকামির কাজ বলে তার মনে হয়। এই ধরনের বাড়ির প্রতিটি কোনায় রহস্য লুকিয়ে থাকে, যা সাদা চোখে ধরা পরে না, তাই যদি ধরা নাও পরে রহস্যময় পরিবেশ বানিয়ে নিতে হয়। তাহলে প্রতিদিন মজা করে থাকা যায়। এখন যেমন তিতির তাকিয়ে আছে বট গাছটার দিকে। মনে হচ্ছে বট গাছের আশে পাশে মেঘের মতন কিছু একটা জমা হচ্ছে। বৈশাখ মাসে কুয়াশা হবার কথা না। তবে শহর অঞ্চলে এক ধরনের কুয়াশা তৈরি হয় সারা বছর ধরে, এই সব কুয়াশা দূষন থেকে তৈরি হয়। কিন্তু এই সব গ্রাম গঞ্জে দূষণ থাকার কথা না। তাই ব্যাপারটার মধ্যে রহস্যের গন্ধ সে পাচ্ছে।
আজ হাওয়ার দাপটও অন্যদিনের থেকে একটু বেশি। বটের শুকনো পাতা উড়ে জমা হচ্ছে নিচের গাড়ি বারান্দায়। তিতির একটু ঝুঁকে দেখছে সে দৃশ্য। গাড়ি বারান্দার একধার দিয়ে একটা মাধবীলতার ঝাড় উঠে গেছে তিনতলার ছাদ পর্যন্ত। থোক থোক মাধবীলতারা দুলে দুলে বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছে মিষ্টি গন্ধ। কিন্তু তিতিরের কোনো গন্ধই আজ ভালো লাগছে না।
এ বাড়িতে সে এসেছে আজ তিনদিন পূর্ণ হলো। বটগাছটার পেছন দিয়ে যে নদী বয়ে গেছে, তার নাম কীর্তনখোলা। তেশরা বৈশাখ এই নদী পথে নৌকা করে সে প্রথম পা রেখেছিল এই বাড়িতে। বিয়ের আগে রানার মুখে বহুবার শুনেছে তাদের দেবীপুরের বাড়ির কথা। সে শুনেছে গ্রামের মেয়েদের ইতু পুজো, পূন্যিপুকুরের কথা। তাছাড়াও এ বাড়ির সাথে তার অন্যরকম একটা সম্পর্ক আছে যা সে বোঝার চেষ্টা করেও বুঝতে পারছে না।
জামশেদপুরের মেয়ে তিতিরের সাথে দেবীপুরের ছেলে রানার পরিচয় মায়ামিতে। দু’জনে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ করছিল। আজও সেই দিনটার কথা মনে আছে তার, যেদিন রানার সাথে পরিচয় হয়েছিল। পরিচয় পর্বটা শুরু হয়েছিল অদ্ভূত একটা ঘটনার মধ্যে দিয়ে। এরকম কোনো ঘটনা দিয়ে যে কোনো প্রেম শুরু হতে পারে তা কোনোদিন ভাবতে পারেনি তিতির। দিনটা ছিল উনিশে এপ্রিল। ইউনিভার্সিটির বাঙ্গালি এসোসিয়েশানের ছেলে মেয়েরা বিকেলবেলা ইউনিভার্সিটি স্পোর্টস ক্লাবে একটা মিটিং ডাকে। সবাইকে মুখে মুখে খবর দেওয়া হয় শুধু কাদম্বরীর জন্য তোমরা এসো। ইউনিভার্সিটিতে এই নামে কোনো মেয়ে পড়ে বলে কেউ মনে করতে পারছিল না। সবাই ভাবল বিদেশে এসে হয়তো মেয়েটি বিপদে পড়েছে, তাই তাকে উদ্ধার করার জন্য ডেকে পাঠিয়েছে। কাদম্বরী নামটা শুনেও মনে হচ্ছিল একজন ঘরোয়া বনেদী ঘরের কোনো মহিলা তিনি। তিতির রাজশ্রীর মুখে খবর পেয়ে বিকেল চারটে নাগাদ পোঁছে গেল স্পোর্টস ক্লাবে। বেঙ্গলি এয়াসোসিয়েশানের সেক্রেটারি সিদ্ধার্থ দা সেদিন যা বলেছিলেন, তা শুনে সবাই বেশ অবাক হয়েছিলো। তিনি বললেন, আজ রবীন্দ্রনাথের বৌঠান কাদম্বরীর মৃত্যু দিন। যিনি নাকি আত্মহত্যা করে মারা গেছিলেন। সিদ্ধার্থ দা জানালেন তাদের একটি গ্রুপ আছে, যারা প্ল্যানচেট করে বিভিন্ন আত্মাদের ডাকেন এবং কথা বলেন। আজ তারা ঠিক করেছেন যে কাদম্বরীকে প্ল্যানচেট করে তারা ডাকবেন এবং তার সাথে কথা বলে তার মৃত্যু রহস্য জানার চেষ্টা করবে। সিদ্ধার্থ দার কথা শেষ করার আগেই বেঙ্গলি এসোসিয়েশানের বারোজন সদস্যের মধ্যে সাতজন উঠে চলে গেল। তিতিরদের সাথে রিসার্চ করত বরুন যাবার আগে সিদ্ধার্থ দাকে চার অক্ষর , পাঁচ অক্ষরের কয়েকটা গালিও দিয়ে গেল। রাজশ্রী আর ওর এক বান্ধবী টিয়া যাবার সময় বেশ বিরক্তি দেখিয়ে সিদ্ধার্থদাকে বলল এভাবে ডেকে পাঠানোর কোনো মানে হয়! এখন থেকে বেঙ্গলি এসোসিয়েশান যদি প্লানচেট করে বেড়ায় তাহলে তারা আর এর মধ্যে নেই। নীল বলে একটা ছেলে বলেছিল তার আবার ভূতে খুব ভয়, তাই ভূতের সাথে যারা সম্পর্ক রাখে তাদের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
এই ভাবে যাদের যাবার তারা যখন চলে গেল তিতির দেখল সে, সিদ্ধার্থ দা, আজাদ দা, সারিকা দি আর একজন শুধু থেকে গেল। সিদ্ধার্থ দা নতুন ছেলেটিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো ওর নাম রানা সেন। ও বাংলাদেশের বরিশাল থেকে এখানে এসেছে । রানাকে প্রথম দেখায় খুব ভালো লেগে গেছিল তার । মাঝারি রঙের ছিপছিপে লম্বা লাজুক ছেলেটির শান্ত নীরব উপস্থিতি বেশ শান্তি দিচ্ছিল তাকে। তিতির অনুভব করেছে যাদের প্রথম দেখায় ওর ভালো লাগে তাদের সাথে ওর সম্পর্ক থেকে যায় । আর যাদের সাথে কথা বলার সময় প্রথম দিন থেকে সে অস্বস্তি অনুভব করে , ও দেখেছে কোন না কোন ভাবে তারা ওর ক্ষতি করেছে । প্রতিটি মানুষ কোন না কোন বিশেষ গুন নিয়ে জন্মায় । তিতিরের মনে হয় তার বিশেষ গুন সে এক দেখায় মানুষ চিনে নিতে পারে ।
সেদিন মিটিংয়ে ঠিক হয় রাত বারোটার সময় সমুদ্রের ধারে পুরনো গীর্জায় তারা সবাই মিলিত হবে। এগারোটা পনেরো নাগাদ সারিকা দি সবাইকে ইউনিভার্সিটি গেটের সামনে থেকে তুলে ড্রাইভ করে নিয়ে যাবে গীর্জায় । মিটিংয়ে এই টুকু কথা হবার পর সবাই চলে যায় । তিতির কিছুক্ষণ বসে থাকে চেয়ারে । ওর সবকিছুর গভীরে ঢুকে একটু ভাবতে ভালো লাগে । প্রতিটা মুহূর্ত মন দিয়ে বাঁচতে ইচ্ছে করে । কারন যে মুহুরত একবার চলে যায় তা আর ফিরে আসে না । আর প্রতিটা মুহূর্তকে মন দিয়ে অনুভব করলে তার মধ্যে থেকে নতুন অনেক রহস্য অনুভব করা যায় । তিতির প্রথম ভাবলো রবীন্দ্রনাথের কথা । সে রবীন্দ্রনাথকে প্রথম চিনেছিল তাদের বাড়ির বসার ঘরের দক্ষিনের দেওয়ালে রবিঠাকুরের একটা ছবি দিয়ে । রবীন্দ্রনাথ পেছনে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন । তারপর সে চিন্তা করল রবীন্দ্রনাথের বৌদির কথা । এই বৌদির সম্বন্ধে সে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলোতে পড়েছিল । যে মহিলা এত বড় কবির লেখার সব থেকে বড় প্রেরনা এবং সমালোচক ছিলেন সে নিশ্চই খুব ব্যক্তিত্বময়ী ছিলেন । তবে আত্মহত্যা করলেন কেন ? আত্মহত্যা যারা করে তারা তো দূর্বল মনের মানুষ হয় । তারপর তিতির ভাবল অনেক সময় কিছু মুহূর্ত অনেক ব্যক্তিত্বময়ীকেও দূর্বল করে দেয় । কথাগুলো ভাবতে ভাবতে সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মোবাইল অন করে দেখল চারটে পঁয়তিরিশ বাজে । মানে এখনো প্রায় ছয় ঘন্টা হাতে আছে । বাড়ি গিয়ে সে একটু ফ্রেস হয়ে ঘুম দিয়ে নিতে পারবে । সে উঠে দাঁড়িয়ে পেছন ফিরে দ্যাখে রানা নামের ছেলেটি ঠিক তার পেছনের চেয়ারে বসে আছে । ছেলেটির মুখে একটা দুষ্টুমী হাসি । তিতিরের মনে হল , না , এবার তো আর ভালো ছেলে মনে হচ্ছে না একে । চুপি চুপি মেয়েদের পেছনে এসে বসা , আবার দুষ্টু হাসি মুখে রেখে অপরিচিতার দিকে তাকানো । ভালো ছেলেরা এ কাজ করে না । এখানে তার ক্যালকুলেশানটা ভুল হয়ে গেলো ।
তিতির রানাকে প্রথম কথাইয় বলেছিল, কি ব্যাপার বলুন তো, আপনি না আমার ডানদিকে বসেছিলেন, পেছনে এসে বসলেন যে?
রানা বলল, আমি সাইকলজির ছাত্র, মানুষের চরিত্রে কোনো ব্যতিক্রম দেখলে তাকে জানতে ইচ্ছে করে। আমি দেখলাম সবাই চলে গেছে কিন্তু আপনি গেলেন না, তখন আমার একটু সন্দেহ হয়। তারপর দেখি মাথা নিচু করে এক মনে বিড়বিড় করে নিজের সাথে কথা বলে চলেছেন। তখন আর কোন সন্দেহ থাকল না। বুঝলাম ব্যতিক্রমী কেস। তাই একটু কাছে বসে শোনার চেষ্টা করছিলাম আপনি কি বলছেন।
তিতিরের খুব অবাক লাগল শুনে যে সে আপন মনে কথা বলে। এতদিন ব্যাপারটা সে বুঝতে পারেনি। ভাগ্যিস ছেলেটা লক্ষ্য করে তাকে জানিয়েছে। তিতির আরো ভাবল সে নিজে কথা বলে তা সে জানে না, কিন্তু ছেলেটা জানে। এ-ও এক রহস্য। ব্যাপারটার গভীরে যাওয়া দরকার। তার ওপর ছেলেটি মানুষের মনের ব্যতিক্রম নিয়ে গবেষনা করছে।
রানা পাশের সিট থেকে ব্যাগটা নিয়ে কাঁধে তুলে বলল, আপনাকে আরেকটা কথা বলি, আমি যে পাশের সিট থেকে উঠে আপনার পেছনে এসে বসলাম, আপনি কিন্তু টের পাননি, কারন আপনি এখানে থেকেও অন্য কোথাও ছিলেন।
রানা দু’পা হেঁটে তিতিরের ডান দিকে এসে দাঁড়াতে তিতির অনুভব করেছিল ছেলেটার জুতোতে একটা ক্যাচ ক্যাচ আওয়াজ হচ্ছে , যা সে শুনতে পায়নি। তিতির বুঝতে পারল একটা কাউন্সিলিং করিয়ে নেওয়া ভালো। ছেলেটা যখন বেরিয়ে যাচ্ছে তিতির ওকে পেছন থেকে ডেকে বলল, আমার মনে হচ্ছে কোথাও একটা গন্ডোগোল আছে।
রানা চলতে চলতে তিতিরের দিকে তাকিয়ে বলে, আমারও তাই মনে হচ্ছে । আপনি বরং একটা কাউন্সিলিং করিয়ে নিন।
তিতির বলে, একটু দাঁড়ান, আমি বলছি আপনার সাথে রোজ যদি একটু সময় করে কথা বলা যায়, তাহলে খুব ভালো হয়।
রানা দাঁড়িয়ে বলে, আচ্ছা, আজ রাতে তো দেখা হচ্ছে, তখন জায়গা ঠিক করে নেবো। কারন আমারো আপনার কেসটা ইন্টারেস্টিং লেগেছে। তাছাড়া কাউন্সিলিং এর জন্য একটু নিরিবিলি জায়গা হলে ভালো হয়।
সেদিন রুমে ফিরে স্নান সেরে এক কাপ ম্যাগি খাওয়ার পর তিতিরের খুব ঘুম পেলো । মানুষ যখন খুব ক্লান্ত থাকে তখন সে ঘুমোলে কোন স্বপ্ন দ্যাখে না। তিতির রোজ খুব ক্লান্ত হয়ে এই সময় ঘুমিয়ে পড়ে, কোনো স্বপ্ন সে দ্যাখে না। কিন্তু সেদিন সে একটা স্বপ্ন দেখলো। সে দেখলো, নদীর ধারে একটা বিশাল বট গাছ । সে একটা ভাঙ্গা দেওয়ালের ঘুলঘুলি দিয়ে সেই বট গাছটাকে দেখছে , সেই সাথে নদীটাকেও দেখতে পাচ্ছে । নদী দিয়ে একটা নৌকা চলে যাচ্ছে। তিতির ভালো করে দেখলো , না নৌকায় কোনো মাঝি নেই । নৌকাটা নিজে নিজেই যাচ্ছে। অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর সে ঘুঙ্গুরের শব্দ পেলো। তার মনে হল সে যেন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে । তিতির ঘুলঘুলি থেকে চোখ সরিয়ে ভেতরের দিকে তাকালো, ভেতরটা খুব অন্ধকার, অনেক্ষণ আলোর দিকে তাকিয়ে থাকার পর সে যখন অন্ধকার ঘরে তাকালো, সে কিছু দেখতে পেলো না। অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর সে দেখলো একটা সিঁড়ির মধ্যে যে দাঁড়িয়ে আছে । সিঁড়িটা নিচের দিকে নেমে গেছে । তিতির সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে, সে যত নিচে নামছে সব কিছু পরিস্কার দেখতে পাচ্ছে । অনেক পুরানো দিনের সেই বাড়ি, সিঁড়িটা দেখেই তা মনে হচ্ছে । নিচে নেমে এসে সে দেখল একটা বড় ঘর । ঘরের মাঝে একটা কাঠের বাক্স । বাক্সের গায়ে নানা রকম কারুকার্য করা । তিতির বাস্কটার সামনে গিয়ে বসে ভাবছে বাক্সটা খুলবে কি না । সে ঠিক করল যে সে বাক্সটা খুলবে । এমন সময় এক ঝাক বাদুর তার দিকে অন্ধকার থেকে ছুটে এলো । তারা তিতিরের দু চোখে আক্রমন করছে । তিতিরের মনে হল সে অন্ধ হয়ে গেল।
এমন সময় এলার্ম ঘড়িটা বেজে উঠতেই তিতির উঠে বসে দেখল ঘড়িতে রাত সাড়ে দশটা বাজে । তিতিরের খুব অবাক লেগেছিল যে সে এইটুকু স্বপ্ন এতক্ষন ধরে দেখলো । সারিকা দি সাড়ে এগারোটার সময় আসবেন । তার মানে আর এক ঘন্টাও নেই । তিতির ফ্রিজ থেকে চিকেনকারিটা বার করে মাইক্রোভেনে দিয়ে রাইস কুকারে ভাতটা বসিয়ে টয়লেটে গেল। হেয়ার ক্যাচারটা খুলে তিতির চুলের ভেতর হাত দিয়ে ম্যাসাজ করতে করতে সাওয়ারটা অন করল । সত্যি সাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকলে মনে হয় সব টেনশন গুলো মাথা থেকে বেড়িয়ে ভেতরটা পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে । কিছুক্ষন দাড়ানোর পর একটু বডি ওয়াশ হাতে নিয়ে সে যখন গালে দিলো , মনে হল এক থাবা লঙ্কা বাটা সে গালে লাগিয়েছে, যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে সে জল দিয়ে ভালো করে মুখটা ধুয়ে আয়নার সামনে এসে দাঁড়াল। তিতির নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সে যা দেখছে তা কি সত্যি না চোখের ভুল। মানুষের মনে বিকৃতি আসলে সে এরকম ভুল দ্যাখে। তিতির গা মুছে একটা গাউন পড়ে বাইরে এসে আবার আয়নার সামনে দাঁড়াল । না চোখের ভুল না সত্যি ওর সারা মুখে আচড়ের দাগ । এমনি সে কোন যন্ত্রনা অনুভব করছে না, কিন্তু বডি ওয়াসটা লাগানোর জন্য যন্ত্রনা হচ্ছিল । কিন্তু এরকম হল কি করে। তিতির তার বিছানা ভালো করে দেখলো, কোথাও কিছু নেই । ঘরের ভেতরেও সে একা থাকে , তবে কে ওকে এভাবে আচড়ে দিয়েছে ? তখন তার স্বপ্নের কথা মনে হল । তবে কি সেটা শুধু স্বপ্ন না , স্বপ্ন ছাড়াও অনেক কিছু ছিল?
মাইক্রোভেনে বিপ বিপ শব্দ হল ।
Read More: তীর্থ যাত্রা ডট কম লিখেছেন যশোধরা রায়চৌধুরী