সবার খবর, ওয়েব ডেস্ক: চীন মানেই পরিশ্রমের এক কারখানা। যেখানে মানুষ জীবনের প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্ত নিজেকে সুন্দরভাবে পেতে পরিশ্রম করে যায়। তাদের তো ধর্ম একটাই, তা হলো পরিশ্রম আর পরিশ্রম। কিন্তু শুনলে আশ্চর্য লাগে যখন এক বড়লোক ঘরের বৃদ্ধা ভিক্ষা করেন। তাঁর পরিবার তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তা কিন্তু নয়। তিনি ভিক্ষা করে গিয়ে সটান পাঁচ তলার বিল্ডিংয়ে আরাম করেন। চলুন জেনে আসি এই ধনী ভিক্ষুকের গল্প।
চীনের হেঙ্গজো-ইস্ট রেল স্টেশনে প্রতিদিন মাইকে করে একটি এনাউন্সমেন্ট হত। তাতে বলা হত, এক বুড়ি দাদির কথা শুনে, তাকে যেন ভিক্ষা না দেওয়া হয়। প্রথম প্রথম এই এনাউন্সমেন্ট সকলকে আশ্চর্য করেছিল। কিন্তু এর পিছনের কাহিনীও বেশ মজার। যে বুড়ি দাদিকে ভিক্ষা দিতে মানা করা হচ্ছিল তার বয়স ৭৯ বছর। আশ্চর্যজনকভাবে ভিক্ষুক দাদি কিন্ত গরিব নয় । তিনি খুব উচ্চ বংশীয় মহিলা। তাঁর পাঁচ তলা ভিলার মতো বাড়ি আছে।
চীনের বড় বড় দৈনিকগুলিতেও এই ভিক্ষুক দাদির কাহিনী ছাপানো হয়। এই বৃদ্ধ মহিলা স্টেশনে বসে মানুষের কাছে নানান দুঃখের কথা শুনিয়ে পয়সা চাইত। কর্তৃপক্ষ জানায় আমরা বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছি তাকে ভিক্ষা থেকে বিরত করার জন্য। কিন্তু তিনি কথা কানে নেননি।
তার পুত্র জানান আমার মাকে ভিক্ষা করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছি অনেকবার। কিন্তু মাকে তো আর শাসন করা বা বেঁধে রাখা যায় না। তিনি আমাদের কথা শোনেননি। সেই কারণেই, মায়ের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মানুষের কাছে ভিক্ষা না দেওয়ার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি মায়ের সামনে। ভিক্ষা যেন তার নেশা।
বুড়ি দাদির অফিস টাইম ঠিক দশটা। দশটার সময় গিয়ে স্টেশনে বসে পড়েন প্রতিদিন। বাড়ি ফেরেন রাত আটটার দিকে। সারাদিনে যা ইনকাম করেন তা বেশ চোখে পড়ার মতো। ৩০০ ইয়ুয়ান প্রতিদিনের আয়। যা ভারতীয় মুদ্রায় ৩১০০ টাকার কাছাকাছি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও প্রতিটি চ্যানেলে তাকে নিয়ে আলোচনা হয়। অনেকেই বলে যদি টাকা পয়সা থাকা সত্ত্বেও সে ভিক্ষা বৃত্তি করে, তবে তা হবে অপরাধের শামিল। আবার কেউ কেউ বলেন, হয়তো বুড়ি দাদির একাকীত্বই তাকে স্টেশনে ভিক্ষা করতে বাধ্য করে। হতে পারে তার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে খুব একটা সময় কাটান না। তার ছেলে বলেন, আমি মাকে সব সময় চোখে চোখে রাখতে পারিনা কারন আমাকেও অফিস যেতে হয়।
আরও পড়ুন: হ্যাশট্যাগ মি টু শব্দ দুটি কে আবিষ্কার করেন? মি টু আন্দোলনের বিস্তারিত ইতিহাস