সবার খবর, ওয়েব ডেস্ক: সারা পৃথিবীর অনেক মানুষ ভূত-প্রেতে বিশ্বাস করে। কিন্তু সত্যিই কি ভূত বলে কিছু আছে পৃথিবীতে? ভূতকে দেখার কথা অনেক মানুষই বলে। ভূতের গল্প আমরা বড়োদের কাছে অনেক শুনেছি। আবার গ্রামে গঞ্জেও অনেক প্রচলিত ভূতের গল্প আছে। কিন্তু ভূতের এই গল্পের সত্যতা কতখানি তা নিয়ে মতভেদ আছে অনেক। ভূত দেখার সময় তাদের অভিজ্ঞতাও বা কি ছিল?
Vuter Golpo
বিজ্ঞান ভূতের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেনা। তবুও চলুন বিজ্ঞানে ভূত সম্পর্কে দৃষ্টিকোণ জেনে নেবার চেষ্টা করি আজ। সাধারণভাবে বলা হয় কুকুর এবং বিড়াল ভূতের অবস্থান বুঝতে পারে। মানবজাতি ২০ হার্জ থেকে ২০০০০ হার্জ পর্যন্ত শব্দ শুনতে পায়। অর্থাৎ ২০ হার্জের নিচে শব্দ শোনা মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। একে ইনফ্রাসাউন্ড (Infrasound) বলা হয়। কিন্তু এই আওয়াজ বিড়াল, কুকুর এই জাতীয় প্রানীরা সহজেই শুনতে পায়। ডঃ রিচার্ড ওয়াইজম্যানের মতে ইনফ্রাসাউন্ড (Infrasound) আমরা শুনতে পাবোনা কিন্তু এর তরঙ্গ পেটে অনুভব করা যাবে। এবং এই তরঙ্গ আমাদের মনে নেগেটিভ এবং পজেটিভ অনুভূতি জাগায়। আমাদের চোখের পলক পড়লেও ইনফ্রাসাউন্ড উৎপন্ন হয়। তাহলে নিশ্চয় বুঝেছেন এই আওয়াজ কতো আস্তে হয়। কোনো কোনো সময় ইনফ্রাসাউন্ড আমাদের মনে নেগেটিভ চিন্তা ঢুকিয়ে দেয়। যেমন কোনো পুরনো বাড়ি, পরিত্যাক্ত স্থান, মানব শূন্য স্থান ইত্যাদি জায়গায় গেলে এই ইনফ্রাসাউন্ড অনুভব করতে পারি। তখনই আমাদের মনে ভুতের কল্পনার ছবি আঁকি, আর এখান থেকেই ভূতের উৎপত্তি হয়।
তাপমাত্রার কম বেশি আমাদের মনে ভূতের অনুভূতি জাগায়। মানুষের মনে ধারণা ভূত যেখানে থাকে সেখানে হঠাৎ করে ঠান্ডা হাওয়া বইতে লাগে। ওই যায়গায় সত্যি ভয় লাগে। কারণ ধাপ আগে বা পিছে ফেললে ওই স্থানের তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়। এইসব জায়গাগুলোকে ভূত গবেষকরা কোল্ড স্পট বলে অবিহিত করেন। ঘোষ্ট হান্টারেদের মতে, একটি ঠান্ডা স্থান অ-মানষিক গতিবিধির লক্ষণ। কিন্তু কোল্ড স্পটের ব্যাপারে বিজ্ঞানের ধারণা সম্পূর্ণ উল্টো। বৈজ্ঞানিক মতে, বিভিন্ন বস্তুর বিভিন্ন তাপমাত্রা আছে। ফলে তাপমাত্রার পার্থক্য দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে। আবার ঘূর্ণায়মান হাওয়া মানবশরীরের তাপমাত্রা থেকে ঠান্ডা হয়।
কার্বোন মনোক্সাইড গ্যাসের অস্তিত্ব সহজে বুঝতে পারা যায় না। এর কোনো গন্ধ বা রঙ নেই। এটি খুবই ক্ষতিকারক গ্যাস। কারণ আমাদের লোহিত রক্ত কণিকা অক্সিজেনের তুলনায় কার্বোন মনোক্সাইড গ্যাসকে বেশি পরিমাণে অ্যাবজর্ভ করতে থাকে। ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। তখন মাথা ধরা, দুর্বলতা, Hallucination প্রভৃতি লক্ষণগুলি লক্ষ্য করা যায়। ফলে অপ্রত্যাশিত মানসিক পরিবর্তন ঘটে। যাকে আমরা ভূত বলে মনে করি। এবং ভূতের চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয় অনেক ক্ষেত্রে।
পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা ছায়ার মতো কোনো প্রতিচ্ছবি দেখেছে। তাদের মতে, এই ছায়া আকৃতির প্রতিচ্ছবি সব সময় ফলো করতে থাকে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে। যখনই এই প্রতিচ্ছবি মানুষ দেখে সঙ্গে সঙ্গে তারা শূন্যে মিশে যায়। একে Electric stimulation of the brain বলা হয়। স্যুইস বিজ্ঞানীরা এক মৃগী রোগীর মস্তিষ্কের ওপর গবেষণা চালিয়ে ইলেকট্রিক উত্তেজনা দেখেন, তখন তারা অবাক হয়ে গেছিলেন। সেই রোগী বিজ্ঞানীদের বললেন, আমার পিছনে এক ছায়ার মতো মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। যা আমার সমস্ত চলন-বলন অবিকল কপি করছে।
যখন তাকে একটি পড়ার জন্যে কার্ড দেওয়া হলো, তিনি বললেন, একটি ছায়া সেই কার্ডটি ছিনেয়ে নিলো। আসলে সেই সময় বিজ্ঞানীরা রোগীর ব্রেনের ‘লেফ্ট টেম্প্রো পেরিয়েটাল জাংসান’কে উত্তেজিত করেছিল। লেফ্ট টেম্প্রো পেরিয়েটাল জাংসান ব্রেনের এমন একটি স্থান যেটি উত্তেজিত করলে নিজের বিচার বুদ্ধি হ্রাস পায় এবং মস্তিষ্কে অপ্রাকৃতিক চিন্তা ভাবনা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের গল্প শুনলে আপনি শিউরে উঠবেন