ছবি: অনির্বাণ পাল
কলরব
মু হ ম্ম দ ম তি উ ল্লা হ্
কলরব কোথাও তেমন একটা নিষেধ নয়
সূর্যোদয় থেকে মধ্য দুপুর তারপর সূর্যাস্তের রঙ
এক ঝিকমিক কলরব দিগন্ত ছুঁয়ে থাকে
তুমি ওই কলরবের ভিতর কেমন ঘুমিয়ে আছো
কেমন আছো তুমি, খুব ভাবছি
ঘনায়মান মেঘ সূর্যের সাত রঙ ছুঁয়ে এল
গাছ থেকে খসে খসে পড়ে পাতা
কলরব এক মস্ত ছায়া, তুমি সেখানে
ঘুমিয়ে আছো
আমি খুব ভেবেছি, তুমি কেমন আছো।
অ-সুখ
নীপবীথি ভৌমিক
সুখ জড়িয়ে বসে আছে যে নদী
তার নাম কখনো বিলাসী রেখোনা।
মানুষ জন্ম চেয়ে চেয়ে বসে থাকা বিরহ পাখি
অসুখে ঘর বাঁধে যে আজ …
অসুখ আজ সুখ নয়, অ-সুখের বিলাসিতা।
শিল্পী বাড়ি এলে
জু বি ন ঘো ষ
অনেকদিন ধরে ভাবছি পান চিবোতে চিবোতে ঠিক কোন চিত্রশিল্পী আমার বাড়ি্তে আসবে
প্যাস্টেল ও ইজের নিয়ে না নিয়ে এলেও হবে
মনের ভেতরে নীল আর বাদামী নখের অধিকারী কোনও শিল্পী এলেই চলবে
পায়ের ফাটলে লেগে থাকবে বীরভূমের লাল মাটি,
আর ছেঁড়া হাফপ্যান্টের বাঁ পকেটে চুনের কৌটো
এসব নিয়ে থাকলে আর কোনও রঙের দরকার পড়বে না
পারত পক্ষে প্রীতম, অমিতদা ও ভাস্করকে ছাড়া আমার সঙ্গে আর কোনও শিল্পীর পরিচয় নেই
ভেবেছি কি কোনোদিন, প্রীতম থাকলে আর কোনও ক্যানভাসের প্রয়োজন নেই
নিজেই একটা আদর্শ প্যালেটের মতো
আসলে আমি যেমন স্প্যাচুলার কথা জানতাম না যা কিনা রংকে টেনে লাগাতে হয়
তেমনি প্রীতমও জানত না, কোনও শিল্পী এলে কীভাবে আমি পাসপেক্টিভ বুঝে নেব
আমি মনে করি প্রত্যেক কবির বাড়িতেই অন্তত একবার কোনও শিল্পীর আসা প্রয়োজন
শিল্পী ঘরে এলে আলো হয়
শিল্পী ঘরে এলে বোঝা যায় আলোছায়ার গুরুত্ব
বোঝা যায় কেন তাজমহল দেখতে কবিরা একমাত্র ঠিক পূর্নিমাতেই আসেন।
কৌতুহল
সো মা শ্রী সা হা
মাঝে মাঝে বেঁচে থাকাটাও অবাক করে
মনে হয়, মানুষের এই যে
বাঁচার অভিপ্রায়, কেন?
চারিদিকে এতো হিংসা-হানাহানি
তবুও বাঁচার প্রত্যাশা ১০০ ভাগ।
কি এমন আছে, এই বাঁচার মধ্যে?
খুব জানতে ইচ্ছে হয়,
মরে গেলে কি হয়?
কীভাবে স্মৃতি গুলো একটু একটু করে
মুছে যায়…
কীভাবে সবাই প্রাণহীন দেহের সাথে খেলা করে?
প্রাণহীন চেতনায় আকাশে ঘুরে -ঘুরে
দেখতে ইচ্ছে হয়, চেনা মানুষগুলি কীভাবে
একে-একে অচেনা হয়ে যায়!
খুব জানতে ইচ্ছে হয়…
অচলায়তন
ব ব মি ত্র
এভাবে কি হয় ? বলো ?
তুমি ঢেউ ঢেউ হয়ে নীল ছুঁয়ে দিলে,
আর আমি নীল নীলিমা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি!
আমার কোত্থাও যাবার নেই,
সাঁতরানো নেই; আছে শুধু এক বুক ঠাঁই-
অভিমানী দিনে সে কেমন পাঁশুটে রং ধরে
আবার ফাগুন দিনে লালে লাল…
তুমি জল হতে চাও ঢেউ ভেঙে ভেঙে,
আর ডুবুরির মতন গভীরতাকে ছুঁয়ে দিয়ে যাও-
মেঘের ছায়া পড়ে তোমার এ দেহে,
মেঘের পেছনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
আমি তখন তোমার সারা শরীরের আয়নায়
নিজেকেই দেখি, তুমি তোলপাড় হয়ে যাচ্ছো
ঘুর্ণির ভিতর প্রেমময় সাদা বুদবুদ :
আমি ভাবি আমি তখন তোমাতেই লীন হয়ে গেছি!
হুঁশ ফিরলে দেখি আমি তো সেই যোজন দূরেই দাঁড়িয়ে আছি…
ধুর ! এভাবে কি কিছু হয় ? বলো ?
আরও পড়ুন: রবিবারের সান্ধ্য কবিতার আসর-৯