সবার খবর, ওয়েব ডেস্ক: ভারতের স্বাধীনতা ইতিহাস ভগত সিং ছাড়া অপূর্ণ থেকে যাবে। ২৩ মার্চ, ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াই করার জন্য ভগত সিং , রাজগুরু ও সুখদেবকে ফাঁসি দেয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রায় ৮৮ বছর পার করে ফেললাম আমরা। কিন্তু ভগত সিং এখনও আমাদের হৃদয়ে বেঁচে আছে। ভারত যত দিন থাকবে ভগত সিং, রাজগুরু এবং সুখদেবের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভগত সিংয়ের সেই ঘর আজও আছে যেখানে তিনি জন্ম গ্রহন করেছিলেন এবং শিশুকাল অতিবাহিত করেন। কিন্তু দেশ ভাগ হওয়ার পর ভগত সিংয়ের সেই বাড়ি পাকিস্তানের মধ্যে চলে যায়। পাকিস্তান সরকার সেই বাড়িকে আজও রেখে দিয়েছে স্মৃতি হিসেবে।
১৯০৭ সালের ২৭ সেপ্টম্বর পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ জেলার বঙ্গ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ভগত সিং। ভগত সিংয়ের পূর্বপুরুষ মহারাজ রঞ্জিত সিংয়ের সেনাপতি ছিলেন। তার পিতা ও কাকা গাদার পার্টির সদস্য ছিলেন। গাদার পার্টি তৈরি হয়েছিলো ইংল্যান্ডে। পাঞ্জাবীদের নিয়ে ভারতের স্বাধীনতায় সাহায্য করার জন্যই এই পার্টি তৈরি করা হয়। এর প্রভাব ভগত সিংয়ের ওপর শৈশব কাল থেকেই পড়তে শুরু করে। ছোট্ট ভগতের মনের ভেতর তৈরি হতে থাকে ব্রিটিশ বিদ্বেষী চিন্তা ভাবনা। নিজের জীবন ভারতের স্বাধীনতার জন্য উৎসর্গ করে দেন। তিনি হিন্দুস্থান রিপাবলিক্যান অ্যাসোসিয়েসানের সদশ্য হন। এখানে চন্দ্রশেখর আজাদ, রাম প্রসাদ, বিসমিল্লা ও সুখদেবের মতো মহান বিপ্লবীরা ছিলেন।
ব্রিটিশ সরকার এই তিন মহান বীর ভগত সিং, রাজগুরু, সুখদেবকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন। এরপর গোটা ভারতবর্ষের মানুষ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন । ফলে ইংরেজরা অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে।
চার বছর আগে পাকিস্থান সরকার ভগত সিংয়ের জন্মস্থানকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে দেয়। বাড়িটি দু-বছর সংস্করণ করার পর জণগনের জন্যে খুলে দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারী ২0১৪ সালে, ফয়সালাবাদ জেলা সমন্বয়কারী অফিসার নুরুল আমিন স্থানটির মেরামত করার জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন। দেশ ভাগের পর বাড়িটি এক উকিল দখল করে নেন। যদিও তিনি ভগত সিংয়ের পরিবার দ্বারা ব্যবহৃত জিনিসগুলি যত্নসহকারে রাখেন। এই জিনিসগুলির মধ্যে আছে তার মায়ের কিছু জিনিস এবং দুই বোনের কাঠের ট্রাঙ্ক ও কিছু জামাকাপড়। এখন অবশ্য প্রশাসন সমস্তটাই তাদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। এই গ্রামে প্রতি বছর ২৩ মার্চ ভগত সিংয়ের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার সাথে শহিদ দিবস পালন করা হয়। এবং শহীদ ভগত সিং মেলাও আয়োজন করা হয়। পাকিস্তানের বঙ্গ গ্রাম হৃদয়ে রেখেছেন ভগত সিংকে একথা বলায় যায়।
আরও পড়ুন: ভারতের এই যায়গাটির সৌন্দর্য সুইজারল্যান্ডকেও হার মানাবে