Home / জাতীয় / মনোহর পারিকর। গোয়াতে বিজেপির বিজয় কেতন যিনি উড়িয়েছিলেন

মনোহর পারিকর। গোয়াতে বিজেপির বিজয় কেতন যিনি উড়িয়েছিলেন

সবার খবর, ওয়েব ডেস্ক: ভারতের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর আজ আর নেই। ১৭ ই মার্চ ২০১৯ এ তিনি এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান। কিন্তু রাজনীতি কোনো দিন থেমে থাকেনা। গোয়ার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন প্রমোদ সাওয়ান্ত। গভীর রাতে রাজভবনে শপথ নেন প্রমোদ সাওয়ান্ত। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শপথ নেন ১১ জন নেতা। মঙ্গলবার সকালে নয়া মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারেন প্রমোদ সাওয়ান্ত। এমনকি দফতরও ভাগ হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।

মনোহর পারিকরের (Manohar Parrikar) পথ চলা

মনোহর পারিকর চারবার গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও একবার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছিলেন। আমাদের এই পোস্টটি মনোহর পারিকারকে নিয়েই। তার জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। তার পুরো নাম ছিল মনোহর গোপাল কৃষ্ণ প্রভু পারিকর। ২০০০ সালে গোয়াতে যখন প্রথমবারের মতো বিজেপি জোট সরকার আসে তখন মনোহর পারিকর ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের কাছে এটি আশ্চর্যের বিষয় ছিল না যে মনোহর পারিকার একজন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন বরং আশ্চর্যের বিষয় ছিল তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও সাধারণ মানুষের মতো স্কুটারে করে দপ্তরে গিয়ে দায়িত্ব সামলেছেন। রাস্তার ধারে খাবারের স্বাদও চেকে দেখেছেন। এমনকি লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে খাবারও নিয়েছেন। মানুষের সমস্যার কথা মন দিয়ে শুনেছেন।এমন সাদামাটা জীবনের জন্যে মনোহর পারিকরকে সকলে পছন্দ করতেন।
manohar parrikar wife
মনোহর পারিকর খুব সাধারন পরিবার থেকে উঠে আসা একজন ব্যক্তি। যার বাবা ছোট্ট একটি দোকান চালাতেন। মনোহর পারিকার পরিবারের একমাত্র সদস্য ছিলেন না যিনি আরএসএস নাম লিখিয়েছিলেন। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আইআইটি মুম্বাই যখন পারিকর পড়তে গিয়েছিলেন তখনও বিজেপির প্রতি ভালোবাসা অটুট ছিল। তিনি দলকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। ১৯৭৭ সালে যখন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী মুম্বাই নর্থ-ইস্ট থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তখন পারিকর বিটেক-এর পড়াশোনা শেষ না করে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর জন্য প্রচারে নেমে পড়েন। পড়াশোনা শেষ করে একটি বহুজাতিক সংস্থাতে মোটা টাকার চাকরির অফার পান কিন্তু গোয়া আসার পরে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে নেমে পড়েন মনোহর পারিকর।

Manohar Parrikar-এর আরএসএস যোগ

গোয়ার দায়িত্বে তখন সুভাষ ভেলিংকার। তিনি রাজ্যের আরএসএস-এর সমস্ত কাজকর্ম দেখছিলেন। মনোহর পারিকর তার শিষ্য হয়ে যান। ১৯৯৪ সালে গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের খোঁজ চলছিল বিজেপি দপ্তরে। সেই সময় মনোহর পারিকর ১৫ জন প্রার্থীর নাম দলের কাছে প্রস্তাব করেন। মজার বিষয় হচ্ছে এই ১৫ জন সদস্যও মনোহর পারিকরের নাম দলের কাছে জমা দেন। গোয়ার মত একটি রাজ্যে বিজেপি বিরোধী দলের মর্যাদা পায় মনোহর পারিকরের নেতৃত্বে। গোয়ার মাটিতে মনোহর পারিকরের নেতৃত্বে বিজেপির বিজয় কেতন উড়তে শুরু করলো। মনোহর পারিকরের জনপ্রিয়তা ছিল অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যেও। যখন ২০১৭ সালে গোয়াতে কোন দলই সরকার গড়তে পারছিল না সেই সময় বিজেপি জোট সঙ্গীরা একটি শর্তেই সরকারকে সাপোর্ট করবেন বলে জানান। সেটি হল গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হবেন মনোহর পারিকার।

মনোহর পারিকর একসময় তার প্রিয় স্কুটারটি চালানো ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার আগে অবশ্য জনতাকে জানিয়ে দেন ঠিক কি কারণে তিনি আর স্কুটার চালাবেন না। তিনি বলেন, আমি বর্তমানে স্কুটার চালাবো না বলে মনস্থির করেছি কারণ সবসময়ই আমার মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খায়। এমতাবস্থায় যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মনোহর পারিকর রাশিয়ার সঙ্গে একটি ডিফেন্স ডিল করেছিলেন। S-400 মিসাইল কেনেন সেনাবাহিনীর জন্য। মনোহর পারিকার একটি ছোটখাট ফ্যাক্টরি চালাতেন। বিজেপির হিন্দুত্ব চলার কথা ছিলনা গোয়াতে। কিন্তু পারিকর সেটি করে দেখিয়েছিলেন। যদিও তা করতে গিয়ে দলের নীতির বিরুদ্ধে যেতে হয় তাকে। গোয়াতে তিনি বীফ বন্ধ করতে পারেননি। সে নিয়েও জাতীয়স্তরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে বিজেপি নানান সময়।

রাজনীতিতে যখন আস্তে আস্তে তার ওপর নতুন নতুন দায়িত্ব আসতে লাগলো সে সময়ে তার পরিবার ও ব্যবসা দেখাশোনার জন্য সময় বের করা একটি দুষ্কর ব্যাপার হয়ে পড়েছিল। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তাকে। তার স্ত্রী মেধার কাছে পারিকর ওয়াদা করেছিলেন যে তিনি আর মাত্র ১০ বছর রাজনীতি করবেন। কিন্তু এরই মধ্যে বাবা, মা এবং স্ত্রী মারা যান। মনোহর পারিকর বলেন, যখন সকলে আমার পরিবারের একে একে চলে গেল তখন রাজনীতি ছাড়ার আর কোন প্রশ্নই নেই। যদিও মনোহর পারিকার গোয়াতে থাকলে দিনে একবার অবশ্যই তার ফ্যাক্টরীতে যেতেন। কিন্তু মনোহর পারিকার আজ আর নেই।
আরও পড়ুন: বিজেপির জুতো পেটাপেটি! ইন্টারনেটে মজা করে সকলে বলছে,’মেরা বুট সাবসে মজবুত’

Check Also

কুমিল্লায় ধর্ষণ

শিক্ষকের ধর্ষণে মা ৭ম শ্রেনির ছাত্রী, চাচার ধর্ষণে মা ভাতিজি

কুমিল্লায় ধর্ষণ – শিক্ষক কিংবা নিকট আত্মীয় কারো কাছেই কি নিরাপত্তা নয় নারীরা?কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কোচিং …